সারাবিশ্বে নারীর ভূমিকা ক্রমবর্ধমানভাবে গুরত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কৃষিপ্রধান এই বাংলাদেশে প্রায় ১৬.৫ কোটি মানুষের অর্ধেক জনসংখ্যাই নারী। ‘নারী’- একসময় যারা সমাজের চোখে অবহেলিত ছিল, আজ তারা শুধু সেই নারীই নন, একাধারে পরিবার, সমাজ ও জাতির কান্ডারি। দেশের উন্নতির চালিকাশক্তির অন্যতম বাহক যে নারী এই কথা আজ অনস্বীকার্য। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে নারীদের অবস্থা পরিবর্তনে অনেক ব্যবস্থা গ্রহণের পরেও শুধুমাত্র স্বতঃস্ফূর্ত এবং নিরন্তর পরিশ্রমী নারীরাই পেরেছেন সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে নিজেদের ও পরিবারের অবস্থার উন্নতি করতে ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে। নারীশিক্ষার বিস্তার ও নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে একটি সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছালেও এখনও চাকরি, অর্থায়ন ও সম্পদের মালিকানার ক্ষেত্রে নারীদের পছন্দ, নিয়ন্ত্রণ ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা অনেকাংশেই তুলনামূলকভাবে কম। কৃষিতে উদ্যোক্তা সৃষ্টি বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তা তৈরি ছাড়া বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, আয় বৈষম্য কমানো ও গ্রামীণ জনপদের জীবনমানের উন্নয়ন সম্ভব নয়। খাদ্য উৎপাদন ও দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করলেও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অপুষ্টি এখনও একটি বড়ো চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে, যেখানে নারী উদ্যোক্তারা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেন। এ গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার আনাচে-কানাচে স্বতঃপ্রণোদিত প্রান্তিক নারী উদ্যোক্তাদের বেড়ে ওঠার গল্প, যাদের জীবনসংগ্রামের কাহিনি অন্যদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তাঁরা অধিকাংশই নিরক্ষর, অল্প শিক্ষিত এবং রয়েছে মূলধন ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাব। তবে তাঁরা সংগ্রামী ও আত্মপ্রত্যয়ী। এই মনোভাবই তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার চালিকাশক্তি। দরিদ্রতার কারণে তারা সাধারণত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ সুবিধা পান না। তারপরেও শত বাধা, প্রতিকূলতা ছাপিয়ে কিছু নারী আজ স্বাবলম্বী, অন্য নারীদের এমনকি পুরুষদের কাছেও অনুসরণীয় এবং নারী জাগরণের পথিকৃৎ- তাদের কথাই এ গ্রন্থে সংকলন করার ক্ষুদ্র চেষ্টা করা হয়েছে।
আশা করি এই বইটির গল্প পড়ে ছাত্র-ছাত্রী ও যুবকসহ অনেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যাপারে উৎসাহী হবেন। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সমাজের বিত্তশালীরাও জানতে পারবে কীভাবে স্বল্প মূলধন সরবরাহের মাধ্যমে গ্রামের প্রান্তিক নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা যায়।
প্রান্তিক নারীদেরঅর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ একদিন শোষণমুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হবে। সেজন্য নারীদের যথাযথ শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, কারিগরি ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং আর্থিক সহযোগিতা আরো জোরদার করা দরকার।
Book Name: | প্রান্তিক নারীদের কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প |
Authors: | ড. জি এম মনিরুল আলম |
Publisher: | meg |
Edition: | 1st Published, 2021 |
ISBN Number: | ৯৭৮-৯৮৪-৮০২৮-৩০-৮ |
Total Page | 0 |
No avaliable information about ড. জি এম মনিরুল আলম.