প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে সময় বয়ে চলেছে। বহমান সময় চির অমুখাপেক্ষী এবং স্বার্থপর। তার পরাক্রমশালী শক্তির কাছে হার মেনেছে সর্বযুগের ইতিহাসখ্যাত রাজা, মহারাজা, বীর, পন্ডিত, রাজনীতিবিদ, শিল্পী, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, বৈজ্ঞানিক এবং পৃথিবীর প্রতিটি সাধারণ মানুষ। এই ইহজগত যেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ সময়ের ঘূর্ণিপাকে কারারুদ্ধ এক বাজিকর ফাঁদ।
কিন্তু চোখের দেখা জগতের বাইরেও আরো একটা জগত আছে বলে আমার বিশ্বাস। সেই অদৃশ্য জগত সময়ের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ওখানে মানুষের আটপৌরে জীবনের ছায়া পড়ে না। মনের ভেতরের কোনো এক লুকায়িত গভীর গহ্বরে সেই জগৎটা ধ্যানমগ্ন ঋষির মতো আসন গেঁড়ে বসে থাকে..... বোধন লাভ করে...... ধীরেধীরে আলোকিত করে তোলে মনের পথঘাট ......... উন্মোচিত হয় হৃদয়াক্ষী। সময়ের দাপটে সেই জগতের এক চুল পরিবর্তনও হয় না। মানুষের বয়স বাড়ে, চামড়া ঝুলে যায়, চোখে ছানি পড়ে, কিন্তু সেই ধ্যানমগ্ন হৃদয়াক্ষীলব্ধ ঋষি চির তরুণ, অবিনাশী এবং জোতির্ময়! এই অতিলৌকিক মনোগত অমরত্ব লাভের যেমন প্রচ্ছন্ন এক প্রশান্তি আছে, তেমনি পীড়াও কিছুমাত্র কম নয়। পাঁচ বছর কেটে গেছে, কিন্তু আমার ভেতরের ক্ষতস্থান এখনো শুকোয়নি। বরং কাটা ঘা দিনকে দিন গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে। ওর প্রতি আমার ভালোবাসা যেমন আগের মতোই ঝকঝকে, অমলিন এবং অবিকৃত অবস্থায় আছে, ঠিক তেমনি ওর কাছ থেকে পাওয়া কষ্টটাও চির জাগ্রত এবং চির প্রতিক্রিয়াশীল। ও চলে যাবার পর থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি ক্ষণ যে অসহনীয় যন্ত্রণা এবং বিরহভার আমার এই দুর্বল হৃৎপিন্ডকে বহন করতে হচ্ছে, তা প্রকাশ করার মতো ভাষাজ্ঞান আমার শব্দভাণ্ডারে নেই। ওর সাথে অন্তত আর একবার দেখা না হলে এই যন্ত্রণা লাঘব হবে না। কিন্তু কোথায় আছে সে? কেমন আছে? তার অস্তিত্বের একটুখানি সংবাদ পাবার জন্য আমার অতৃপ্ত মন ছটফট করে অহর্নিশি। কিন্তু সে আছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তার পরিবারের সদস্যরাও নাকি তার কোনো হদিশ জানে না। এই রহস্যের সমাধান আমি কী করে করি? কে আমাকে সাহায্য করবে? কে আমার মনটাকে বুঝার মতো করে বুঝবে যে পাঁচ বছর কেন, পাঁচ শতাব্দী পার হয়ে যাবার পরেও ওকে আমি ভুলতে পারব না।
Book Name: | হৃদয়াক্ষী |
Authors: | ওয়াসিকা নুযহাত |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Published, 2021 |
ISBN Number: | NA |
Total Page | 608 |
No avaliable information about ওয়াসিকা নুযহাত.