যতদূর সন্ধান পাওয়া যায়, বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম ক্রাইম কাহিনি হলো পুলিশের দারোগা বাঁকাউল্লার কীর্তিকলাপ। “বাঁকাউল্লার দপ্তর” নাম দিয়ে প্রকাশিত দারোগা সাহেবের বারোটি কীর্তির প্রথম প্রকাশ যে কবে, সে সম্বন্ধে জানা যায় না। তবে বাঁকাউল্লার দপ্তরে বর্ণিত ঘটনার সময়কাল যতদূর সম্ভব উনবিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকের একেবারে শেষ দিকে কিংবা চল্লিশের দশকে। কারণ ঠগী দমনের জন্য নির্দিষ্ট আলাদা বিভাগের সুপারিনটেন্ডেন্ট স্লীম্যান সাহেব কমিশনার পদে উন্নীত হয়েছিলেন ১৮৩৯ খ্রিষ্টাব্দে।
অবশ্য বরকতউল্লা খাঁ যে তার কীর্তিকাহিনি ওই চল্লিশের দশকেই রচনা করেছেন, তা-ও নয়। কারণ তিনি নিজেই লিখছেন, “আমার নিজের জীবনে যে সকল অদ্ভুত অদ্ভূত ঘটনা ঘটিয়াছে...তাহা অতি অদ্ভুত, অবসরকালে সে সকল বৃত্তান্ত শুনিবার জন্য দেশের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি পথ খরচ করিয়া আমার দরিদ্র-কুটীরে পদার্পণ করেন।”
অধ্যাপক সেন, আরও জানিয়েছেন, বরকতউল্লার সফল তদন্তের কিছু কাহিনি পুলিশের ফাইল থেকে উদ্ধার করে ইংরেজি ভাষায় ছাপা হয়েছিল আনুমানিক ১৮৫৫ সালের পর। তার বেশ কিছুকাল পরে এটি বাংলায় রূপান্তরিত ও মুদ্রিত হয় “বাঁকাউল্লার দপ্তর” নামে।
আনুমানিক ১৯০৫ নাগাদ বইটির একটি সংস্করণের পর অধ্যাপক সুকুমার সেনের সম্পাদনায় ১৩৮৯ বঙ্গাব্দে (ইং ১৯৮৩) নতুন করে প্রকাশিত হয় “বাঁকাউল্লার দপ্তর”।