উবু হয়ে নিচের ফ্লোরবোর্ড কম্পার্টমেন্ট থেকে শক্ত একটি কেস বের করে আনলো সে। এরপর বুড়ো আঙ্গুল স্থাপন করলো কেসের সিলের ওপর। আঙ্গুলের ছাপটা শনাক্ত হয়ে যেতেই খুট করে খুলে গেলো সিলটা।
এমন না যে তাকে নিয়োগ করা ব্যক্তি কোনো কারণে তার অস্ত্রের সাথে কোনো গড়বড় করবে, তারপরও সাবধানের মার নেই।
কেসটা খুলে ঝট করে ভেতরের সবকিছু দেখে নিলো একবার। “হ্যালো, অ্যানা,” কেসের অস্ত্রটাকে ফিসফিস করে বলল ও। অস্ত্রটার সে নাম দিয়েছে অ্যানা ম্যাগডালিনা। অ্যানা ম্যাগডালিনা আসলেই খুবই চমৎকার, কালো রঙের সেমিঅটোমেটিক একটা রাইফেল। এটা দিয়ে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছুড়তে মাত্র দুই সেকেন্ড লাগে। মাত্র তিন মিনিটের মধ্যেই এটাকে খুলে আলগা করে আবার জোড়া লাগিয়ে ফেলা যায়, সেটাও আবার শুধু একটা স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে। বাজারে এর থেকেও উন্নত আরো অনেক রাইফেল এসেছে, তবে অ্যানা ম্যাগডালিনা তাকে কখনো ব্যর্থ করেনি। যে-কোনো দূরত্ব থেকেই লক্ষ্যভেদ করা সম্ভব এই অস্ত্রটা দিয়ে। তাত্ত্বিকভাবে বললে, ডজনখানেক ব্যক্তি এটার যথাযথতার নিশ্চয়তা দিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে বোগোটা, কলাম্বিয়ার এক প্রসিকিউটর (সাত মাস আগে যার ঘাড়ের ওপর একটি মাথা ছিল), দারফুরের এক বিদ্রোহি সেনাদলের নেতা (আঠারো মাস আগে হঠাৎ করেই যার মগজ ছিটকে পড়েছিল তার কোলে রাখা ভেড়ার বাচ্চার স্যুপের বাটিতে)।
প্রতিটি মহাদেশেই হত্যা করেছে সে। তার খুনের তালিকায় রয়েছে জেনারেল, অ্যাক্টিভিস্ট, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ আরো অনেকেই। সে শুধু নারী হিসেবে আর তার প্রিয় ক্ল্যাসিক্যাল-মিউজিক কম্পোজারের দ্বারা পরিচিত। সেইসাথে তার খুনের শতভাগ সফলতা দিয়েও।
"এই মিশনটা সম্ভবত তোমার সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে, বাখ," বলেছিল তাকে এই কাজে নিয়োগ দেওয়া লোকটা।
"না," জবাবে তাকে শুধরে দিয়ে বলেছিল ও, "এটা হতে যাচ্ছে আমার সবচেয়ে বড়ো সাফল্য।"